আব্দুল কাইয়ুম, জয়পুরহাট: চন্দ্রিমা অধিকারী একজন নারী পুলিশ। সেবা প্রার্থীদের নিঃস্বার্থ ও নিরলসভাবে সেবা দেওয়াই তার একমাত্র কাজ। তিনি পুলিশের চাকুরীতে যোগদানের পর থেকেই এমনভাবে দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়া তিনি নিজের প্রয়োজনীয় কাজ নিজে করতে পছন্দ করেন। নিরাঅহংকার, সৎ, সর্বদা হাস্য উজ্জল মানবিক এ নারী পুলিশ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার একজন সিনিয়র উপ-পরিদর্শক (এসআই) চন্দ্রিমা অধিকারী।
এ থানায় যোগদানের পর থেকেই তিনি নিয়মিত দ্বায়িত্ব পালনের পাশাপাশি থানার নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেক্সের দ্বায়িত্ব পালন করেন। তার নিকট সেবা নিতে আসা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়না। থানার অফিসার ইনচার্জের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতায় ওইসব সেবা প্রত্যাশীদের নিরলসভাবে সেবা প্রদান করেন তিনি। সেবা নিতে আসা কাউকে কোন উৎকোচ প্রদান করতে হয়না। এমনকি ঝামেলা বিহীন সততার সহিত যেকোন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। সেবা নিতে আসা অনেকেই মানবিক এ পুলিশ কর্মকর্তার কর্মকান্ড দেখে অভিভুত ও অবাক হন।
নারী শিশু ডেক্স রুমটি ঝাঁড়– হাতে পরিস্কার করতে দেখা যায়। একজন পুলিশ অফিসার হয়ে এমন কাজ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস অথবা বাসার নিজের যেকোন কাজ নিজে করা মন্দর কিছু নেই। আর আমি এসব পরিবার ও সিনিয়র স্যারদের নিকট থেকে শিক্ষা পাওয়া কাজ করলে মান কমে না বরং বৃদ্ধি পায়। সমাজে অনেক উচু শ্রেণীর মানুষ আছে অনেকেই এমন কাজ করতে সংকোচ বোধ করেন। আমার এমনটা মনে হয় না সর্বোদা কাজ নিজেই করার চেষ্টা করি। থানায় কর্মরত অনেক পুলিশ সদস্যই বলেন, তিনি বরাবরই এমনটি করে আসছেন কখনই সংকোচ মনে করেন না।

নিরঅহংকার এ পুলিশ কর্মকর্তা খুলনা জেলার দিঘালীয়া উপজেলার মাঝিরগাতী গ্রামের শিক্ষিত হিন্দু পরিবারে ১৯৯২ সালে জন্ম গ্রহন করেন। বাবা জ্ঞানেন্দ্রনাথ অধিকারী অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, মা শিক্ষিত গৃর্হিণী। ৩ বোন, ২ ভাইয়ের মধ্যে চন্দ্রিমা সবার বড়। শিক্ষকতায় বাবার অবসরের পর সবার বড় হওয়ায় সংসারের দ্বায়িত্বটাও তার কাঁধে চাপে। ছোট ৪ ভাই-বোনদের পড়ালেখার খরচ তাকেই চালাতে হয়। ২০০১ সালে গ্রামের স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী, ২০০৬ সালে এসএসসি ও ২০০৮ সালে এইচএসসি পাশ করেন। পরে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ২০১৬ সালে অর্নাস ও ২০১৮ সালে মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন চন্দ্রিমা। পড়ালেখা চলাকালেই ২০১৮ সালে ৩৬’তম ক্যাডেট পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে পুলিশের এসআই পদে রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রির্জাভ পুলিশ বিভাগে যোগ দেন তিনি। জয়পুরহাট জেলা পুলিশে ২০২১ সালে যোগদান করে সদর থানায় এস,আই পদে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালে পাঁচবিবি থানায় আসার পর থেকেই তিনি নারী ও শিশু সার্ভিস ডেক্সের দ্বায়িত্ব পালন করছেন চন্দ্রিমা অধিকারী।

পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জাহিদুল হক বলেন, চন্দ্রিমা অধিকারী একজন সৎ ও কর্মোঠ পুলিশ অফিসার। যোগদানের পর থেকে তিনি সততার সহিত দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন।